সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন
নওগাঁর বদলগাছীতে এক গৃহবধূর (২৮) গোসলের ছবি গোপনে মোবাইল ফোনে তুলে রাখে স্বামীর ভাইয়ের ছেলে (ভাতিজা)। পরে সেই ছবি নেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন চাচিকে ধর্ষণ করে ভাতিজা। পরে ছবি এডিট করে ভিডিও করে বিভিন্ন মোবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ার পর গৃহবধূকে তালাক দিয়েছেন তার স্বামী।
এ ঘটনায় গত ২২ মে থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। অভিযোগের চার দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেনি।
জানা গেছে, গত ৮ বছর আগে গৃহবধূর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৭ বছরের এক মেয়েসন্তান আছে। গত এক বছর আগে উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নে স্বামীর ভাইয়ের ছেলে গোপনে গৃহবধূর ছবি ধারণ করে। ছবি থেকে ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। বিষয়টি স্বামীকে অবগত করা হলে ভাতিজার পরিবারকে জানায়। এতে ভাতিজা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবেশী নারীর (৩৬) মাধ্যমে স্থানীয়দের মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়। ভিডিও প্রকাশের পর গৃহবধূকে তার স্বামী তালাক দেন।
এদিকে গৃহবধূ বিচারের জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের চার দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সমঝোতার নামে ভুক্তভোগীকে থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে ভুক্তভোগীকে সরিয়ে দেয়া হয়।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, ভাতিজা গোপনে গোসলের ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিত। বাধ্য হয়ে কুপ্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ৩-৪ দিন শারীরিক সম্পর্ক করে। গত এক বছর আগে ভাতিজা বিয়ে করে। তারপরও সে আমার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বলে। এতে রাজি না হওয়ায় ছবি থেকে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয়। পরে স্বামী তাকে তালাক দেয়। আমি স্বামী ও সংসার করতে চাই। ভাতিজার শাস্তির দাবি করেন তিনি।
গৃহবধূর স্বামী বলেন, ও হচ্ছে আপন চাচাতো ভাইয়ে ছেলে (ভাতিজা)। সমস্যা শুরু হলে স্ত্রী তাকে জানায়। ভাতিজার বাবা-মাকে জানানো হলে কিছুদিন ভালো ছিল। এরই মধ্যে ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় আদালতের মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছি। কাগজটা তার কাছে হয়ত পৌঁছেনি।
প্রতিবেশী নারী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কয়েক দিন আগে আমার বাড়িতে পিকনিক করে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। এ সময় ভাতিজা তার মোবাইলে মেমোরি কার্ড দিয়ে আমার বাড়িতে টিভিতে গান দেখছিল। এমন সময় ওই ভিডিওটি দেখে ছেলেরা চিৎকার দিয়ে উঠে। পরে ঘরের ভেতরে এসে টিভিটা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেমোরি কার্ডসহ তাকে ধরে গৃহবধূর স্বামীর কাছে নিয়ে যাই। তবে ভিডিওটি আমি ছড়ায়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভাতিজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ মে গৃহবধূ লিখিত অভিযোগ করেছেন। একটি ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিডিওটি অস্পষ্ট হওয়ায় ভিডিওটির সঙ্গে গৃহবধূ বা অভিযুক্তের তেমন মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্তকে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না।